◼ Language :- Bengali 💛
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের এক ছোট শহর রানাঘাট। এখন মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হয়ে যাওয়ায় এক সন্ধ্যায় ছয়জন বন্ধু— জিয়া, পবিত্র, সৌরভ, লাবনী, অঙ্কিতা আর বর্ষা—গিয়েছিল রানাঘাটের একটি বড়ো স্টেডিয়ামে ‘ধূমকেতু’ মুভি দেখতে| শোটা শেষ হয়েছে বিকাল চারটার নাগাদ। তারা সকলে হেসে হেসে মজা করতে করতে স্টেডিয়াম থেকে বার হচ্ছিল, রাস্তা দিয়ে চলার সময় জিয়ার চোখে পড়ল এক বিশাল বড়ো লাইব্রেরি। সেই লাইব্রেরির উপর ঝুলছে একটি বড়ো বোর্ড, তাতে লেখা: রানাঘাট পাবলিক লাইব্রেরি - ১৯০২।
জিয়া দাঁড়িয়ে পড়ল | “এতো পুড়াতন লাইব্রেরি কিন্তু এখোনো এতো ভালো” কথাটি নিজের মনে ভাবলো জিয়া। “হয়তো লাইব্রেরিটা rebuilt করা হয়েছে” যেন জিয়ার মনের কথাটি বুঝতে পেড়ে উত্তরটি দিলো আঙ্কিতা | পবিত্র বলল, “যদি একটু ঘুরে দেখা যায়?” জিয়া মাথা নাড়তেই সবাই রাজি হয়ে গেল |
“পরীক্ষা শেষে বিদ্যাসাগরের নাত্নি হওয়ার ইচ্ছা হয়েছে সবকয়টার” সৌরভ একটু হেসে বলল | “ওই তুই চুপ কর” লাবনী সৌরভ কে উদ্দেশ্য করে কথাটি বলিল | লাবনীর দিকে আঙুল দেখিয়ে সৌরভ বলল “ওই আমি তোকে কিছু বলছি, তুই আগে আগে কথা বলছিস, তোর মাথায় সমস্যা আছে |” “ হ্যাঁ ভালো আমার মাথায় সমস্যা আছে, তুই জানিস না আমার মাথায় সমস্যা, অঙ্কিতা ও জানেনা আমার মাথায় সমস্যা রয়েছে” সৌরভ কে কথাটি বলল লাবনী | “বাদদে তো ওর কথা, ও ওই রকম বকে” সৌরভকে উদ্দেশ্য করে লাবনী কে বলল অঙ্কিতা কথাটি |
“ তোরা কি যাবি লাইব্রেরির ভিতর?, গেলে এখনই চল না হলে পরে দেরি হয়ে যাবে।” সকলকে উদ্দেশ্য করে বর্ষা কথাটি বলল | “ আরে হ্যাঁ যাবো তো, লাবনী চল ও না গেলে না যাক।” আবার সৌরভকে উদ্দেশ্য করে লাবনীকে বলল অঙ্কিতা। পিছন থেকে সৌরভ বলল “ওই আমি বলেছি আমি যাব না তোর এত বেশি বুঝিস কেন |” “বেশি কথা না বলে চল” পবিত্র সৌরভ কে বলল | “ আরে এ একটু বেশি বোঝে” লাবনীর দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে পবিত্র কে বলল সৌরভ | “আরে ওর কথায় কান দিস না যা বলছে বলুক” লাবনীর কানের কাছে এসে ফিসফিস করে কথাটি বলল অঙ্কিতা |
সকলে লাইব্রেরির ভিতরে ঢুকলো, ভেতরে ঢুকে দেখে দুই তলা এবং অনেক বড়ো লাইব্রেরিটা, লাইব্রেরির ভিতরে প্রচুর পরিমাণে মানুষজন।
পবিত্র একটু আস্তে বলল “এখানে সবাই কত চুপচাপ এমন মনে হচ্ছে যেন কেউ নেই |” “পাগল এক নাম্বারের, লাইব্রেরির ভিতরে সকলে চুপচাপি থাকে কেউ কথা বলে না, আর তুইও আরো একটু আস্তে কথা বল।” পবিত্র কে কথাটি বলল লাবনী | “সরি ম্যাডাম আমাকে মাফ করে দাও আমি তো জানতাম না এখানে আরও আস্তে কথা বলতে হয়। আর সবাই চুপচাপ থাকে লাইব্রেরির ভিতর” মাথাটি নিচু করে কথাটি বলল পবিত্র লাবনীকে | লাবনী একটু হেসে উত্তর দিল “হ্যাঁ ঠিক আছে ঠিক আছে হয়েছে হয়েছে আর মাথা নিচু করতে হবে না |”
তারা সকলে সোজা উঠে গেল দ্বিতীয় তলায়। সবাই মিলে গল্পের বই ঘাঁটছিল, আর জিয়া এগিয়ে গেল এক কর্নারের বুক শেলফের দিকে।
সেখানে একটা বাদামি বঙের ডায়েরি চোখে পড়ল জিয়ার, যার ওপর সোনালী রং দিয়ে মোটা অক্ষরে লেখা: Madrick Family Notebook।
হাত বাড়িয়ে ডায়েরিটা তুলল জিয়া। খুলে দেখে—একেবারে ফাঁকা! একটাও লেখার কোনো কালী নেই! একটার পর একটা সাদা পৃষ্ঠা। তখনই সকলে চলে আসলো সেইখানে। “কিরে এত মনোযোগ দিয়ে কি দেখছিস?” অঙ্কিতা জিজ্ঞাসা করলো জিয়াকে। জিয়া উত্তর দিল “আরে দেখ না এখানে এই বইটা পেলাম কিন্তু বইয়ের ভিতরে কিছু লেখাই নেই” তখনই পেছন থেকে পবিত্রর গলা এল, “ ভূতের বই মনে হয়,” | “এখানে কিছু লেখাই নেই তাহলে ভূতের বই হবে কিভাবে?” একটি ভুরু উঁচু করে জিয়া কথাটি জিজ্ঞাসা করল পবিত্র কে | “ আরে নাঃ ভূতের বই মানে ভূতের গল্পের বইয়ের কথা বলছি না, মানে এটা মনে হয় কোন ভুতুড়ে বই।” উত্তর দিয়ে জিয়ার দিকে তাকালো পবিত্র | পবিত্রোর উত্তরটি শুনে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলো জিয়া তার দিকে | “কি হলো ভয় পাচ্ছিস নাকি? আমিতো এমনি বলছিলাম |” জিয়াকে তার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে জিয়া কে উদ্দেশ্য করে কথাটি বলল পবিত্র। “ভুতে ভয় পাস তুই, আমি না” পবিত্র কে আঙ্গুল দেখিয়ে কথাটি বলল জিয়া |
“ওই এবার চল লাইব্রেরি থেকে আর দেরি করলে ট্রেন মিস হয়েযাবে।” সকলকে উদ্দেশ্য করে বর্ষা বলল কথাটি | “আরে যাচ্ছি” লাবনী বলল বর্ষাকে | “যাচ্ছি যাচ্ছি না তুই জানিস আমার মাকে কতবার বলার পর কত কষ্ট করে এসেছি” লাবনী কে বলল বর্ষা | “হ্যাঁ তা দাঁড়া, যাচ্ছি আমরা যাব না বলেছি” বর্ষাকে বলল লাবনী | “হ্যাঁ তোরা যত ইচ্ছা দেরি কর আমি বোসে রয়েছি এই খানে |” একটু রেগে কথাটি বলে পাশের একটি চেয়ারে বোসে পরলো বর্ষা | “হ্যাঁ বস!” লাবনী একটু হেসে বর্ষাকে বলল | “এই না বর্ষা ঠিকই বলছে এখন বার না হলে হইতো ট্রেনটা সত্যি সত্যি মিস হয়ে যাবে” অঙ্কিতা বলল | “দেখলি আমি বললাম চল” বর্ষা চেয়ার থেকে উঠে বলল | “হ্যাঁ চল চল চল চল” সৌরভ বললো | “জিয়া এবার চল” পবিত্র বলল |
জিয়া ডায়েরিটা বুক সেলফের উপর রেখে সবাইকে অনুসরণ করে বাইরে বের হয়ে গেল। তারা একটা ট্যাক্সি ধরে স্টেশনে চলে গেল। ট্রেনে অনেক হাসি, ঠাট্টা, সৌরভের টিপ্পনি, লাবনীর বিরক্ত মুখ—সব মিলিয়ে চেনা বন্ধুত্বের খুনসুটি।
“তোর আঙ্গুলের এই জায়গায় কিভাবে কেটে গেল?” অঙ্কিতা জিয়াকে জিজ্ঞাসা করল | অঙ্কিতার কথাটি শুনে জিয়া তার বাম হাতের তার্জনী আঙ্গুলের দিকে তাকালো ছোট্ট একটা কাটার দাগ কিন্তু রক্ত বার হচ্ছে না সেখান থেকে। “জানিনা, লাইব্রেরিতে ঢোকার সময় তো ঠিকই ছিল হয়তো লাইব্রেরির ভেতর কিছুতে একটাই কেটে গেছে।” জিয়া বলল |
রাত সাড়ে নটার সময় সকলে বাড়ি পৌঁছালো। ক্লান্ত শরীরে খাওয়া দাওয়া করে জিয়া ব্যাগ খুলে ফোন আর মানিব্যাগ বার করছিল, তখন হঠাৎ কিছু একটা দেখি জিয়া অনেক ভয় পেয়ে যায়! Madrick Family Notebook! জিয়ার ব্যাগের ভিতর | বইটিকে তার ব্যাগের ভিতর দেখে জিয়ার পুরো গা ঠান্ডা হয়ে যায়। “আমি তো বই বইটা বুকশেলফে রেখে এসেছিলাম! কিন্তু এখন এটা আমার ব্যাগে?”
হাত কাঁপতে লাগল। বুক ধকধক করছে। জিয়া ধীরে ধীরে ডায়েরিটা টেবিলে রাখল।
ঠিক তখনই দরজায় ধাক্কা দেওয়ার শব্দ এলো “জিয়া?”, “হ্যাঁ.. হ্যাঁ আম্মু” জিয়া উত্তর দিল | “অনেক রাত হয়েছে, এবার ঘুমিয়ে পড়” জিয়ার আম্মু জিয়াকে বলল | “হ্যাঁ আম্মু এইতো, ঘুমাচ্ছি” এটি বলে জিয়া তার ঘরের আলো বন্ধ করে শুয়ে পড়লো|
Thanks for reading 💖
Language :~ Bengali💛
আকাশে প্রচুর পরিমাণে মেঘ জমে ছিল। হঠাৎ একটি জোরালো মেঘের গর্জনে জিয়ার ঘুম ভেঙে গেল। ঘুম থেকে উঠে সে দেখে কালো মেঘ পুরো আকাশকে ঢেকে নিয়েছে। কিছুক্ষণ জানালার বাইরে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকল জিয়া, তারপর হঠাৎ করেই প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। জিয়া তাড়াতাড়ি তার ঘরের সমস্ত জানালা বন্ধ করে দিল।
সে আবার ঘুমানোর চেষ্টা করল, কিন্তু ঘুম আসল না। খাটে বসে পড়ল জিয়া। এখন সকাল না রাত—কিছুই যেন বোঝা যাচ্ছিল না। সময়টা জানার জন্য সে হাত বাড়াল পড়ার টেবিলের দিকে, যেখানে তার ফোন রাখা ছিল। ফোনটা নিতে গিয়ে তার চোখ পড়ল সেই Madrick Family Notebook-এর দিকে। নোটবুকটি দেখেই তার গায়ে কেমন একটা ঠান্ডা শিহরণ বয়ে গেল।
নোটবুকটির দিকে তাকাতেই তার মনে পড়ে গেল পবিত্রর কথা। গতকাল লাইব্রেরিতে পবিত্র এই বইটিকে “ভূতুড়ে বই” বলেছিল। ভূতুড়ে বই কথাটা মনে পড়তেই জিয়ার শরীর কেঁপে উঠল।
“না না… এমন কিছুই না। আমি হয়তো ভুলে বইটা সঙ্গে করে এনেছি। হ্যাঁ, তাই হবে।” ভয় পেলেও নিজেকে বোঝাতে লাগল জিয়া। যদিও ভেতরে ভেতরে সে জানে কথাটা মিথ্যে, কারণ খুব ভালো করেই মনে আছে সে বইটা বুকশেলফের ওপর রেখেছিল। তবুও নিজেকে সাহস দেওয়ার জন্য বারবার বলল, “ভুলবশত বইটা নিয়ে এসেছি হয়তো…”
টেবিলের ওপর নোটবুকটির পাশে রাখা ফোনটা হাতে তুলে নিল সে। লক খুলতেই দেখে ভোর পাঁচটা বাজে। মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর আজই প্রথম এত ভোরে ঘুম ভাঙল তার।
কিছুক্ষণ ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে রইল জিয়া, তারপর দীর্ঘ একটা নিশ্বাস ছেড়ে খাট থেকে নেমে দরজার দিকে গেল। দরজা খুলে ঘরের বাইরে বেরিয়ে এল সে। তখনও প্রবল বৃষ্টি পড়ছে।
ধীরে ধীরে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামল জিয়া। বাড়িতে সকলে ঘুমিয়ে আছে, শুধু তার মা ছাড়া। জিয়ার বাবা দেশের বাইরে কাজ করেন, আর তার মা বাড়িতে সেলাইয়ের কাজ করে কিছু আয় করেন।
ওয়াশরুমের সামনে গিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল জিয়া, যেন কিছু একটা ভাবছে। তারপর ভেতরে ঢুকে গেল। সাত মিনিট পর ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এসে দেখে মা রান্নাঘরে চা বানাচ্ছে। জিয়া সোজা মায়ের ঘরে ঢুকল। ভেতরে ঢুকে দেখে তার ছোট বোন লিজা ফোনে গেম খেলছে।
“ওই, আজ তোর টিউশন নেই?” জিয়া জিজ্ঞাসা করল।
“না।” মাথা নেড়ে উত্তর দিল লিজা।
কিছুক্ষণ পর চা পান করে জিয়া উপরে নিজের ঘরে ফিরে গেল। ঘরে ঢুকেই ফোন হাতে নিয়ে খাটের এক কোনায় বসে পড়ল। তবুও বারবার তার দৃষ্টি চলে যাচ্ছিল টেবিলে রাখা সেই বইটির দিকে। ঠিক তখনই ফোনে চোখ পড়ল তিন মিনিট আগে আসা একটি মেসেজে।
মেসেজটি করেছিল লাবনী। তাতে লেখা ছিল—
“সকাল ১১টার সময় আমাদের যে কম্পিউটার ক্লাস আছে, এত বৃষ্টির মধ্যে যাবি, জিয়া?”
মেসেজটা পড়ে জিয়া সঙ্গে সঙ্গেই তার আরেকজন বন্ধু আনিসাকে ফোন করল, যে তাদের সাথেই কম্পিউটার ক্লাসে যায়। জিজ্ঞাসা করল একই কথা।
উত্তরে আনিসা বলল—
“প্রতি সপ্তাহে তো মাত্র দুই দিন ক্লাস হয়। মোটে ছয় দিন গিয়েছি টিউশনি। বৃষ্টি হচ্ছে তাই কি হয়েছে! এখান থেকে একটা বাসে উঠব, সরাসরি কম্পিউটার সেন্টারের সামনে নামিয়ে দেবে। আমি যাব।”
“আচ্ছা ঠিক আছে, তুই যেহেতু যাবি তাহলে আমিও যাব। এক কাজ করি, আমি লাবনীকে বলে দিচ্ছি, তুই বাকি দু’জনকে বলে দিস।” জিয়া বলল।
“হ্যাঁ, সৌরভ আর পবিত্রকে আমি ফোন করে জানিয়ে দিচ্ছি।” উত্তর দিল আনিসা।
কিছুক্ষণ পর দৃশ্য বদলাল অন্ধকারে ঢাকা একটি ঘরের দিকে। ঘরটি বড় বড় প্রাচীর দিয়ে তৈরি, উপরে ছাদ, ভেতরে কোনো জানালা বা দরজা নেই—পুরো রহস্যময়, যেন কোনো ভূতের ঘর।
ঘরের ভেতরে রহস্যময়ভাবে একটি ছেলে আটকা পড়ে গেছে। সে বারবার ঘরের ভেতর থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘরের ভেতরে কোনো একভাবে পানি ঢুকতে শুরু করে। ধীরে ধীরে পানি ছেলেটির গলা পর্যন্ত উঠে আসে।
সে প্রাণপণ চেষ্টা করছে ঘর থেকে বের হওয়ার জন্য। খানিক পর পুরো ঘর পানিতে ভরে যায়। ছেলেটির চোখ বন্ধ হয়ে আসছে, নিঃশ্বাস নিতে পারছে না, ধীরে ধীরে পানির নিচে ডুবে যেতে শুরু করে। তার কাছে মনে হতে লাগল, যেন সে কোনো সমুদ্রে টেলিপোর্ট হয়ে গেছে।
“আমি কি সত্যি মরতে যাচ্ছি? কিন্তু আমি এত তাড়াতাড়ি মরতে চাই না…” ছেলেটি ভাবতে লাগল। হঠাৎ পানির নিচ থেকে একটি অস্পষ্ট কালো হাত তার দিকে এগিয়ে আসে। হাতটিকে নিজের দিকে আসতে দেখে ছেলেটি ভাবল—
“এক সেকেন্ড… এটা কার হাত? এটা কি আমাকে বাঁচানোর জন্য আসছে?”
কালো হাতটি ছেলেটির মুখের একেবারে কাছে আসতেই সে জোরে চিৎকার করে উঠল—
“আআআআহ্!”
ও নিজের চোখ খুলে ফেলল।
“হাহ্…!” পবিত্র একটি দীর্ঘ শ্বাস ফেলল।
“কেমন ভয়ংকর স্বপ্ন ছিল…”
আসলে এই সমস্ত কিছুই ছিল পবিত্রর এক দুঃস্বপ্ন। স্বপ্নটি সে প্রায় আধাঘন্টা আগে দেখেছিল। কিন্তু সেই স্বপ্নের জন্য সে এতটাই ভয় পেয়ে গেল যে এখনও তার হাত-পা কাঁপছে। তার মনে হচ্ছে সত্যিই যেন সে মারা যেতে যাচ্ছিল। যদিও সবই স্বপ্ন, তবুও পবিত্রর কাছে তা একেবারে বাস্তব লেগেছে।
এদিকে পবিত্রর মা রান্নাঘরে নাশতা তৈরি করছে, আর পবিত্র বসে আছে ডাইনিংয়ে। তখন সকাল সাড়ে সাতটা।
“কিরে, টিউশনে যাবি তো?” মা জিজ্ঞাসা করল।
“হ্যাঁ? কী? এত বৃষ্টির মধ্যে? না…” পবিত্র উত্তর দিল।
“আনিসা ফোন করেছিল। ওরা সকলে যাবে।” মা আবার বললেন।
তার মায়ের কথা শুনে পবিত্র কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে রইল। খানিক পর উত্তর দিল—
“হ্যাঁ… তাহলে যাব।”
দুই ঘণ্টা পর পবিত্র, জিয়া আর আনিসা—এই তিনজন ছাতা হাতে রাস্তার একপাশের দোকানে দাঁড়িয়ে আছে বাসের জন্য। এদের বাড়ি কাছাকাছি হলেও লাবনী আর সৌরভ থাকে অনেকটা দূরে। আর বর্ষা ও অঙ্কিতা বনগাঁর টিউশনে যায় না।
কিছুক্ষণ পর তারা বাস আসতে দেখে।
বাস আসতে দেখে তারা তিনজন ছাতা মেলে রাস্তার পাশে এসে দাঁড়াল। বাসটি তাদের সামনে এসে থামতেই, তারা তাড়াতাড়ি বাসের ভিতরে উঠে পড়ল। ভেতরে গিয়ে দেখে, লাবনী আর সৌরভ আগে থেকে সেখানে বসে আছে। লাবনী হাত নেড়ে ইশারা করল, যেন তারা তার কাছে আসে। পুরো বাসের সব সিট ভরা, কেবল লাবনীর পাশের একটি সিট খালি।
লাবনী জানালার ধারে বসেছিল, তার পাশের খালি সিটে গিয়ে আনিসা বসে পড়ল। লাবনীর সামনের সিটে জানালার পাশে সৌরভ বসেছিল। সে উঠে দাঁড়িয়ে জিয়াকে তার সিটে বসতে বলল, আর নিজে পবিত্রর সাথে দাঁড়িয়ে পরলো।
প্রায় এক ঘণ্টা পর তারা বনগাঁতে পৌঁছাল। বাস থেকে নেমে সরাসরি কম্পিউটার ক্লাসে চলে গেল। তারা একটু তাড়াতাড়ি পৌঁছেছিল, তাই পুরো ক্লাস তখনো ফাঁকা — আর কোনো স্টুডেন্ট আসেনি।
কম্পিউটার ক্লাস শেষ করে তারা সবাই মিলে একটি রেস্টুরেন্টে গেল। আজ বৃষ্টির কারণে ক্লাসে বেশি কেউ আসেনি — তাদের পাঁচজনের সঙ্গে আরও তিনজন এসেছিল, মোট আটজন।
রেস্টুরেন্টে পৌঁছে তারা দেখে, পুরো রেস্টুরেন্ট একেবারে ফাঁকা।
রেস্টুরেন্টের ভেতরে শুধু তারা পাঁচজন আর দুইজন স্টাফ ছিল।
“তাড়াতাড়ি বল, কি খাবি?” – পবিত্র সবার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করল।
“আরে আমি বলছি শোন, একটা পিজ্জা আর পাঁচটা কোল্ড ড্রিঙ্কস।” – সৌরভ বলল পবিত্রকে।
“এত ঠান্ডার মধ্যে কোল্ড ড্রিঙ্ক খাবি?” – লাবনী বিস্ময়ভরে বলল।
“হ্যাঁ খাব, তুই খালি খা না খালি তোর খেতে হবে না।” – সৌরভ উত্তর দিল। লাবনী কিছু একটা বলতে গিয়েও থেমে গেল।
কয়েক মুহূর্ত নীরব থাকার পর সৌরভ আবার জিজ্ঞেস করল,“তাহলে, খাবি?”
“হ্যাঁ… খাবো।” – লাবনী ধীরে উত্তর দিল।
এরপর সৌরভ ও পবিত্র অর্ডার দিতে চলে গেল।
জিয়া তার ব্যাগ শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কিছুটা অন্যমনস্কভাবে বসেছিল।“কিরে, কি হয়েছে তোর? এমনভাবে বসে রয়েছিস কেন?” – লাবনী কৌতূহলভরে জিজ্ঞেস করল। “আরে, কিছু না… কিছু না।” – জিয়া দ্রুত উত্তর দিল, কিন্তু তার চোখে অস্বস্তি স্পষ্ট।
আসলে জিয়ার মাথায় ঘুরছিল ভিন্ন এক চিন্তা। কম্পিউটার ক্লাসে ব্যাগ থেকে পেন আর ডায়েরি বের করার সময় সে লক্ষ্য করেছিল—তার ব্যাগের ভেতর Madrick Family Notebook রাখা আছে!
কিন্তু এটা তো একেবারেই অসম্ভব। সে খুব ভালোভাবেই মনে করতে পারছে — টিউশনে আসার সময় ঘর থেকে বের হওয়ার আগে নোটবুকটিকে পড়ার টেবিলে রেখে গিয়েছিল। শুধু তাই নয়, সেটিকে দুইটি মোটা বইয়ের নিচে চাপা দিয়ে রেখেছিল।
তাহলে… নোটবুকটি তার ব্যাগের ভেতরে এলো কীভাবে?
নোটবুকটিকে নিয়ে ভয়ে আর চিন্তায় পড়ে যাই জিয়া। বারবার মনে হচ্ছিল—তাদেরকে কি নোটবুকের ব্যাপারটা বলা উচিত?
শেষমেশ আর কিছু না বলে সেদিন সবাই মিলে বিকেল তিনটার দিকে বাড়ি ফিরল।
রাত সাড়ে সাতটা
নিজের ঘরের দরজা ভেতর থেকে লক করে পড়ার টেবিলের সামনে চেয়ারে বসেছিল জিয়া। টেবিলের ওপর দুটি বইয়ের উপর রাখা ছিল সেই Madrick Family Notebook।
সাহস সঞ্চয় করে জিয়া নোটবুকটি খুলল। একের পর এক পৃষ্ঠা উল্টাতে লাগল — প্রতিটি পৃষ্ঠাই ফাঁকা।
হঠাৎ নয় নম্বর পৃষ্ঠায় এসে থেমে গেল সে। বুকের ভেতর হালকা ধুকপুকানি নিয়ে হাতে পেন তুলে নিল। মোটা মোটা অক্ষরে লিখল—
“My name is Jiya.”
লিখে কিছুক্ষণ নিস্তব্ধভাবে তাকিয়ে রইল সেই লাইনটার দিকে।
ঠিক তখনই, জিয়ার চোখ বড় বড় হয়ে গেল।
সে দেখল—পাতার ওপর লেখা অক্ষরগুলো আস্তে আস্তে ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে… ।
এই দৃশ্য দেখে ভয়ে কেঁপে উঠল জিয়া। ঠোঁট শুকিয়ে এল, হাতের পেন প্রায় ফসকে পড়তে যাচ্ছিল।
Language :~ Bengali💛
জিয়া পাগলের মত Notebook টির দিকে তাকিয়ে থাকে। Notebook এর উপর লেখা অক্ষরগুলো পুরোপুরি অদৃশ্য হয়ে গেল। Notebook এর পেজটি আবার পুনরায় সাদা হয়ে যায়।
জিয়া একটি দীর্ঘশ্বাস ফেললো “হাহহ! সিরিয়াসলি?”
“আমার সাথে কেন এমনটা হচ্ছে?” নিজের মাথার উপর হাত রেখে কথাটি বলল জিয়া।
তখনই হঠাৎ সাদা পেজের উপর মোটা মোটা অক্ষরে লেখা ভেসে উঠলো —
" Hello Jiya "
এটা কোন রকম স্বাভাবিক কিছু নয়, জিয়া আরো ভয় পেয়ে গেল। Notebook এর ওপরে যেটা লেখা উঠে এসেছিল সেটাও ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে গেল। জিয়ার মনে হল যে সে এইভাবে Notebook টির সাথে কথা বলতে পারবে।
জিয়া নিজের হাতের পেনটি শক্ত করে চেপে ধরল, তার হাতটি একটু কাঁপছিল, কিন্তু সে আবার Notebook এ লেখা শুরু করল —
"Who are you?"
কিছুক্ষণ পর সেই লেখা মিলিয়ে গিয়ে আবার নতুন অক্ষর ফুটে উঠলো —
"My name is Melisa Madrick."
“কী? 'Melisa Madrick' ?” জিয়া কিছুটা আশ্চর্য হল। জিয়া আবার প্রশ্ন করল —
“এই Notebook টি কি তোমার?”
প্রশ্নটি করার কিছুক্ষণের মধ্যেই Notebook টির মধ্যে থেকে Melisa উত্তর দিল — “Yes”
জিয়া নিজের হাতটি শক্ত করে মুঠ বদ্ধ করলো, মনে সাহস নিয়ে এসে Melisa কে জিজ্ঞাসা করল —
“তাহলে তোমার Notebookটি আমার কাছে কি করছে? এটি বারবার আমার কাছে কেন ফিরে আসছে? আর তুমি, তুমি আসলে কি?”
প্রশ্ন গুলি করে জিয়া আগ্রহ নিয়ে Notebook টির দিকে তাকিয়ে রইলো। তার লেখাগুলি অদৃশ্য হয়ে গেল। কিন্তু সেই পেজে আর কোন লেখা ফুটে উঠলো না।
জিয়া একটু দ্বিধায় পড়ে গেল “আহহ! এগুলো কি একটু বেশি কঠিন প্রশ্ন? সে কি এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে পারবেনা?” কথাটি বলে জিয়া হাতে পেন নিয়ে আবার অন্য প্রশ্ন লিখতে যাচ্ছিল। কিন্তু ঠিক তখনই Notebook এর পেজগুলি এক এক করে উল্টাতে শুরু করে।
পেজগুলি ওল্টাতে ওল্টাতে Notebook এর মাঝ বরাবর পেজে চলে আসলো। আর সেখানে তৈরি হলো একটি ম্যাজিকাল সিম্বল।
জিয়ার পুরো ফোকাস Notebook টির উপরে ছিল।
ধীরে ধীরে Notebook টি হাওয়ায় উড়তে শুরু করল আর পেজ গুলির মধ্য দিয়ে সোনালী রঙের এক রকমের ম্যাজিক বার হতে শুরু করল —
জিয়ার কিছু বুঝতে পারার আগেই Notebook টি তাকে একটি অন্ধকার ঘরের ভিতর টেলিপোর্ট করে দিল। অন্ধকার ঘরটির চারপাশে জিয়া তাকিয়ে দেখল, পুরো জায়গাটার ভিতরে সে একাই রয়েছে। তার হাত নিচে মেঝেতে টাচ হতেই তার নিচে একটি বড় ম্যাজিক্যাল সিম্বল তৈরি হয়ে গেলো।
জিয়া তাড়াতাড়ি সেখানে উঠে দাঁড়ালো, তার কিছু বলার আগেই সেই ঘরের ভিতরে একটি মেয়ের কন্ঠস্বর শোনা গেল “Hello Jiya, আমাকে ক্ষমা করো, যে আমি তোমার অনুমতি ছাড়াই তোমাকে এখানে আমার কাছে টেলিপোর্ট করে নিয়েছি।”
“কে, কে?” জিয়ার কণ্ঠস্বর ভারী হয়ে গেল, সে এদিকে ওদিকে তাকালে, “কে বলছো?”
“আমি? আমি তোমাকে এটা আগেও বলেছি জিয়া, আমার নাম Melisa Madrick.”
Jiya:- “Melisa? But... ত—তুমি...”
“তোমার প্রশ্নগুলি অনেক ছিল, সেগুলোর উত্তর ওভাবে Notebook এ দেওয়া যেত না তাই তোমাকে এখানে নিয়ে আসলাম।” Melisa বলল।
“তাহলে কি তুমি এবার আমার প্রশ্নগুলোর উত্তর দিবে?” জিয়া জিজ্ঞাসা করলো।
Melisa :- “Yes, of course”
Jiya :- ঠিক আছে..., তাহলে আমার প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে, আমি আসলে কোথায় রয়েছি এখন?
Melisa :- তুমি এখন Notebook এর ভিতর আমার ডোমেনে রয়েছে।
Jiya :- Wait! What? ডোমেন?
“ডোমেন মানে হচ্ছে —” Melisa এর আর কিছু বলার আগেই জিয়া তাকে থামিয়ে দেয়, “ঠিক আছে এটা বলার দরকার নেই। আমি জানি এর মানে কি, তুমি আমার দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর দাও। এই Notebook টি বারবার আমার কাছে কেন চলে আসছে? যতবারই আমি এটিকে আমার থেকে দূরে রাখছি ততবারই এটি আমার কাছে টেলিপোর্ট হয়ে যাচ্ছে।”
Melisa :- কারণ তুমি এই Notebook টির ওনার, তুমি যতক্ষণ না এই Notebook টিকে একসেপ্ট করছ নিজের কাছে রাখার জন্য ততক্ষণ এই বইটি তোমার পিছু ছাড়বে না।
“কিন্তু... আমি এই Notebook টির ওনার কবে হলাম? এটাতো তোমার Notebook” জিয়া আশ্চর্য হয়ে Melisa কে জিজ্ঞাসা করল।
“যেদিন তুমি লাইব্রেরিতে গিয়ে Notebook টি তোমার হাতে উঠিয়েছিলে সেদিন থেকেই তুমি এই Notebook এর ওনার হয়ে গেছে।” Melisa এর কথা শুনে জিয়া চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে আর সেদিনের লাইব্ররির কথা মনে করে, Melisa আরো বলে —
“তার মানে এই নয় যে, শুধু তুমি Notebook টিকে প্রথমে হাতে ধরেছিলে বলে তার মালিক হয়ে গেছ। না… বিষয়টা ভিন্ন। তোমার অজান্তেই যখন তোমার ব্লার্ড এই Notebook কে স্পর্শ করেছিল, Notebook টি সেই ব্লার্ডকে শোষণ করে নিয়েছিলো। আর ঠিক সেই কারণেই… এখন থেকে তুমি এই Notebook এর প্রকৃত মালিক।”
Melisa এর কথাটি শুনে জিয়ার চোখ বড় বড় হয়ে গেল, সে তাড়াতাড়ি তার হাতটি উপরে করল এবং সেই আঙুলের দিকে তাকালো যেখানে তার কেটে গেছিল লাইব্রেরির ভিতর। জিয়া বুঝতে পারলো Notebook এ তার রক্ত এখান থেকেই লেগেছে।
“তার মানে সবকিছু এই ননসেন্স কারণের জন্য হয়েছে।” জিয়া কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকলো তারপর “ Okay... fine, আমি আর এগুলো পরিবর্তন করতে পারবো না। তাই এগুলো নিয়ে আমার নিজেকে দোষারোপ করা উচিত নয়।”
Jiya :- এবার আমার তৃতীয় প্রশ্ন হচ্ছে তুমি, তুমি কী একটি ভূত?
জিয়ার প্রশ্নটি শুনে Melisa কিছুক্ষণ চুপ থাকে, তারপর উত্তর দেই “না, আমি কোন ভূত নই। কিন্তু আমি প্রায় 330 বছর আগে মারা গেছি।”
Jiya :- ভূত নয়, কিন্তু 330 বছর আগে মারা গেছো আবার আমার সাথে এখন কথা বলছো, মানেটা কি?
“জিয়া, আমি এবার তোমাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতে চাই যেহেতু তুমি এখন Notebook টির মালিক।” Melisa একটু বেশি সিরিয়াস হয়ে যায়।
Jiya :- গুরুত্বপূর্ণ কথা, মানে?
“আমি কোন ভূত নই জিয়া নাই কোন soul, এই Notebook টি আসলে আমার আর এই Notebook এর ভিতরে আমার Conscience স্টোর করা রয়েছে ম্যাজিকের কারণে। আর এটা আমি নিজেই করেছি, আসলে আমি একজন মেজ।” Melisa জিয়াকে বলল।
“Wait! What? ত—তুমি একজন মেজ, কিন্তু এটা সম্ভব কীভাবে?” জিয়া অবাক হয়ে Melisa কে প্রশ্ন করল।
“আমার মনে হয় তুমি জানো মেজ মানে কি?” Melisa এর এটা বলার সাথে সাথে জিয়া উত্তর দিল “হ্যাঁ অবশ্যই আমি জানি, কিন্তু—”
Jiya :- আচ্ছা ঠিক আছে আমি বুঝতে পেরেছি।
Melisa :- কী বুঝতে পেরেছো?
“এই যে, তুমি আসলে অন্য একটি dimension থেকে এসেছ, তাই না?” জিয়া Melisa কে প্রশ্ন করল।
জিয়ার প্রশ্নে Melisa একটু অবাক হলো কিন্তু সে উত্তর দিল “হ্যাঁ, তুমি ঠিক বলছো।”
“তাহলে তোমার dimension টা আসলে কেমন?” জিয়া কৌতুহল নিয়ে জিজ্ঞাসা করল।
“আসলে আমাদের দুনিয়া তোমাদের এই দুনিয়া থেকে অনেক বেশি আলাদা। আমি দুই মাস আগে এই dimension এ এসেছি, আমি অনেকবার এই dimension টাকে এনালাইজ করেছি আমার ম্যাজিক দিয়ে। তোমাদের এই dimension এ কোন রকমের ম্যাজিক বা মানা নেই, আছে মানে তার পরিমাণ খুবই কম আর ধীরে ধীরে সেটি আরো কমতে শুরু করছে।” Melisa জিয়াকে বলল।
Jiya :- তার মানে তুমি বলছো আমাদের এই dimension এ মানা তো আছে কিন্তু তার পরিমাণ অনেক কম আর সেটাও ধীরে ধীরে আরো কমতে শুরু করছে, তার মানে এখানে এমন কেউ আছে যে এই মানাটাকে absorb করছে।
Melisa :- জিয়া আমি এখন এত কিছু তোমাকে বলতে পারবো না যে সেটা কিভাবে হচ্ছে, কিন্তু আমি তোমাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলছি যে তুমিও এখন একজন মেজ।
Jiya :- Wait..., মানে? আমি একজন মেজ, তুমি কি বলছো? আমি কিভাবে একজন মেজ হতে পারি?
Melisa :- জিয়া এই Notebook টা আমার আমি এই Notebook টাকে তৈরি করেছি, আর এই Notebook এর ভেতর আমার আমার ম্যাজিক পাওয়ার আর মানা আছে, তাছাড়া এমন অনেক কিছু আছে যার বিষয়ে তুমি ভাবতেও পারবেনা।
তুমি যখন Notebook ওনার হয়েছ তখন এই Notebook এর ভিতরে যে আমার মানা ছিল সেই মানা তোমার শরীরের ভিতরে চলে গেছে। শুধু তাই নয় তোমার আশেপাশে তখন যারা ছিল তাদের ভিতরেও মানা চলে গেছে।
আর তোমাকে এখন এই মানা সামলাতে হবে, কারণ তুমি যদি মানা কন্ট্রোল করতে না পারো তাহলে তুমি মারা যেতেও পারে।
জিয়া অবাক এর সাথে ভয়ও পেয়ে গেল “কিন্তু আমি এই মানা সামলাবো কিভাবে? আর আমার আশেপাশে যারা ছিল মানে, তার মানে কি পবিত্র, লাবনী, অঙ্কিতা, বর্ষা আর সৌরভ তাদের মধ্যেও মানা চলে গেছে?”
“হ্যাঁ, আর তুমি মানা কিভাবে কন্ট্রোল করবা, তার বিষয়ে তোমাকে চিন্তা করতে হবে না। আমি তোমাকে এখন এমন জায়গায় পাঠাচ্ছি যেখানে তুমি মানাকে কন্ট্রোল করতে শিখবা।” কথাটি বলে Melisa জিয়াকে সেই অন্ধকার জায়গা থেকে টেলিপোর্ট করে একটি ঘর যার চারপাশে শুধু বই ছিল সেখানে পাঠিয়ে দেয়।
Download NovelToon APP on App Store and Google Play